নবীন নিউজ, ডেস্ক ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:০০ পি.এম
এক বাটনের টিপেই দেখতে পারছে প্রিয় মানুষের মুখ। তাই সামাজিকতার অনেক কিছুই এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটছে। তারমধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বিয়ে। যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপকতায় মানুষ এখন খুব কাছেই মনে করে নিজেদের।
একজন মেয়ে একজন ছেলেকে পত্রের মাধ্যমে জানিয়েছে, ‘আমি একহাজার টাকা মোহরানায় আমাকে বিয়ে করে নেয়ার জন্য আপনাকে উকিল বানালাম’। অতঃপর ছেলেটি দুইজন আকেল বালেগ মুসলিম পুরুষের সামনে মেয়েটির এই পত্র পাঠ করে শুনিয়েছে এবং সে দুইজনের সাক্ষী রেখে বলেছে, ‘অমুকের মেয়ে অমুক তাকে বিয়ে করে নেওয়ার জন্য উকিল বানিয়েছে, আমি পঞ্চাশ হাজার টাকা মোহরানায় তাকে বিয়ে করে নিলাম’। এখন জানার বিষয় হল, উল্লেখিত পদ্ধতিতে এই বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে কি? তাদের সন্তানাদি হলে তা বৈধ হবে কি?
উপরের এ পদ্ধতিতে এখন অহরহ বিয়ে হচ্ছে, এসব বিয়ে কি আসলে বৈধ না অবৈধ? ভুল পন্থা না সঠিক পন্থা? মূলত যে পদ্ধতিটি উপরে উল্লেখ করা হলো এভাবে বিবাহের যাবতীয় শর্ত পাওয়া যাওয়ায় বিবাহ সংঘটিত হয়ে যাবে। বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার দরুন প্রজন্মও বৈধ হবে।
তবে জানার বিষয় হলো শরিয়াহ মুতাবিক বিবাহে কুফু (সমতা) বজায় রাখা খুবই জরুরি। যদি উল্লেখিত বিবাহ এমন ব্যক্তির সাথে হয় যার দরুন উভয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়? তাহলে এমন বিয়েতে অভিভাবকের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ সম্পূর্ণ বৈধ। তিনি চাইলে আদালতের মাধ্যমে এই বিয়ে ভঙ্গ করে দিতে পারে।
সুতরাং আপনারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করে থাকেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামি শরিয়া মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে গেছে। যদিও আপনাদের পরিবার কিছুই জানে না। কিংবা যদি তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।
عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا
হজরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। (মুয়াত্তা মালিক-৮৮৮, মুসলিম -১৪২১)
عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ قَالَ: ” جَاءَتِ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أَبِي وَنِعْمَ الْأَبُ هُوَ، خَطَبَنِي إِلَيْهِ عَمُّ وَلَدِي فَرَدَّهُ، وَأَنْكَحَنِي رَجُلًا وَأَنَا كَارِهَةٌ. فَبَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى أَبِيهَا، فَسَأَلَهُ عَنْ قَوْلِهَا، فَقَالَ: صَدَقَتْ، أَنْكَحْتُهَا وَلَمْ آلُهَا خَيْرًا. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نِكَاحَ لَكِ، اذْهَبِي فَانْكِحِي مَنْ شِئْتِ
হজরত সালামা বিনতে আব্দুর রহমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার এক মেয়ে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এল। এসে বলল, হে আল্লাহর রসুল! আমার পিতা! কতইনা উত্তম পিতা! আমার চাচাত ভাই আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল আর তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। আর এমন এক ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাইছেন যাকে আমি অপছন্দ করি।
এ ব্যাপারে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার পিতাকে জিজ্ঞাসা করলে পিতা বলে, মেয়েটি সত্যই বলেছে। আমি তাকে এমন পাত্রের সাথে বিয়ে দিচ্ছি যার পরিবার ভাল নয়। তখন রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেয়েটিকে বললেন, এ বিয়ে হবে না, তুমি যাও, যাকে ইচ্ছে বিয়ে করে নাও।
(সুনানে সাঈদ বিন মানসুর-৫৬৮, মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-১০৩০৪, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৫৯৫৩, দিরায়া ফী তাখরীজি আহাদিসীল হিদায়া-৫৪১)
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, কুমারী মেয়ে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বলল, আমার পিতা আমার অপছন্দ সত্বেও বিয়ে দিয়েছে, তখন রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সে মেয়েকে অধিকার দিলেন, (যাকে ইচ্ছে বিয়ে করতে পারে বা এ বিয়ে রাখতেও পারে)। (মুসনাদে আহমাদ-২৪৬৯, সুনানে ইবনে মাজাহ-১৮৭৫, সুনানে আবু দাউদ-২০৯৬, সুনানুল কুবরা নাসায়ি-৫৩৬৬, সুনানে দারা কুতনি-৩৫৬৬)
দূর থেকে ভিডিও কল বা ফোনে বিয়ে করতে হলে বরপক্ষের কাছে কনে পক্ষের উকিল (কাউকে নিজেদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব প্রদান ও গ্রহনের অধিকার বা সম্মতি দেয়া হলেই তিনি উকিল বা প্রতিনিধি সাব্যস্ত হন) উপস্থিত থাকে এবং তারা ইজাব কবুল করে তাহলে নিঃসন্দেহে বিবাহ হয়ে যাবে।
কারণ ইত্তিহাদুল মজলিসের শর্ত এক্ষেত্রে পূরন হয়ে যায়। অনুরূপভাবে কনে পক্ষের কাছে বরপক্ষের উকিল উপস্থিত থেকে ইজাব কবুল করলেও একই বিধান প্রযোজ্য। মোটকথা, কোন একপক্ষ ও অপরপক্ষের উকিলের উপস্থিতিতেও ইজাব কবুল সংঘটিত হলে বিবাহ হতে কোন সমস্যা নেই। এক্ষেত্রে বর কনের ভিডিও কলের মাধ্যমে ইজাব কবুল করাও অর্থহীন। তবে দর্শক হিসেবে ভিডিও কলে থাকতে সমস্যা নেই।
অতএব, দূরে অবস্থানকারী কাউকে বিবাহ করতে চাইলে ফোনের মাধ্যমেই সেখানে উপস্থিত কাউকে উকিল বানিয়ে দিবে। এবং সেই উকিল তার মুয়াক্কিলের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত অপরপক্ষের সাথে ইজাব কবুল করবেন। বিয়ে একটি পবিত্র সম্পর্ক। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই হক্কানি আলেমদের উপস্থিতি জরুরি। আপনার যদি বিয়েই না হয় তাহলে আজীবন ঘর-সংসার করবেন অবৈধভাবে এটা খুবই জঘণ্য কাজ হবে। তাই এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখা জরুরি।
দলিল: ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৯৪, ১/৩৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ৩/৫১৬; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৪/৩৬, আল মাবসুত ৫/১৬-১৭, ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৬
নবীন নিউজ/জেড
স্বামীর ভালোবাসা ফিরিয়ে আনার কোরআনি আমল
অভাব-অনটন থেকে মুক্তি মিলবে যে দোয়ায়
আল-আজহার মসজিদের ১ হাজার ৮৫ বছর উপলক্ষে ইফতারে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
একটি পাখির কারণে আফ্রিকার প্রথম মসজিদের স্থান নির্বাচন করা হয়েছিল!
ধর্ষণকারীকে যে শাস্তি দিতে বলেছে ইসলাম
রোজা রেখে আতর-পারফিউম ব্যবহার করা যাবে?
ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে যা বললেন আজহারী
রোজার মাস মানেই কি ভালো খাবার খাওয়া?
রমজানে রোগীদের জন্য কিছু মাসয়ালা
অজু-গোসলের সময় গলায় পানি গেলে রোজা ভেঙে যাবে?
মসজিদে হারাম ও নববিতে আজ জুমার নামাজ পড়াবেন যারা
ইফতারে ঝটপট সবজি কাটলেট তৈরি করবেন যেভাবে
আলট্রাসনোগ্রাম করলে রোজা ভেঙে যাবে?
ইফতারের পর ধূমপান করলে যেসব বিপদ ঘটে শরীরে
যেসব কারণে রোজার ক্ষতি হয় না
জাকাতের টাকায় ইফতার সামগ্রী দেওয়া যাবে?
ইফতারের আগে করা যায় যেসব আমল
রোজা আদায় না করলে যে শাস্তি
মানুষের সেবা করার সেরা মাস রমজান
‘আমিই জীবন দেই, আমিই মৃত্যু দেই, আর আমার কাছেই সবাইকে ফিরে আসতে হবে’
রমজানে যে ৭ আমল বেশি করতে হবে
রমজান মাসে ফজিলতপূর্ণ যে ৩ আমল করবেন
ইফতারে আরবদের পাতে শোভা পায় যেসব ঐতিহ্যবাহী খাবার
রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত
রমজানে ওমরা করলে আসলেই কি হজের সওয়াব পাওয়া যায়?
সব মসজিদে একই পদ্ধতিতে খতম তারাবি পড়ার আহ্বান
সাহাবিদের যেভাবে পরীক্ষা নিতেন নবীজি
জিনের ক্ষতি থেকে বাঁচতে যে দোয়া পড়বেন
হারামাইনে ১০ রাকাত তারাবির সিদ্ধান্তে দেওবন্দ মাদরাসার উদ্বেগ
ইফতারে কোন দেশে কী খাওয়া হয়?