নবীন নিউজ ডেস্ক ২৯ ডিসেম্বার ২০২৪ ০৩:৩৪ পি.এম
স্বল্পতা-সংকট থাকলেও দেশের ঐশ্বর্যশালী পর্যটননগরী হচ্ছে কক্সবাজার। কিন্তু সেই নগরীতেও দেখা মিলছে না কোনো বিদেশি পর্যটকের। উল্টো দেশি পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠছে মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশ। কক্সবাজারের অপার সৌন্দর্যকে কেন্দ্র করে মহাপরিকল্পনা প্রণীত না হওয়ায় ধুঁকছে দেশের পর্যটনশিল্প।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাংলাদেশি ভ্রমণপিপাসুদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে শীর্ষে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় অবস্থানে থাইল্যান্ড। পর্যটন ব্যবসাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশীয় পর্যটন অঞ্চলে হোটেল-মোটেলে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া, নিরাপত্তা ঘাটতি, যাতায়াতে বাড়তি খরচ এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছেন অনেকে। পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের জন্য বাড়তি সুযোগ-সুবিধা না থাকা, ব্র্যান্ডিংয়ে ঘাটতি ও পরিকল্পিত পর্যটন ব্যবস্থার অভাবে পর্যটকসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
পুলিশের বিশেষ শাখার তথ্য বিশ্লেষণ করেও দেখা গেছে, দেশে দিন দিন বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা নিম্নগামী। দেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিপুলসংখ্যক বিদেশি কর্মী কাজ করছেন। এর ফলে বিদেশি আগমনের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। সে তুলনায় পর্যটনকেন্দ্র ঘিরে বিদেশি আগমনের সুনির্দিষ্ট তথ্য কোথাও পাওয়া যায়নি। পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের দাবি, বিদেশি পর্যটক এখন আসছে না বললেই চলে।
পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে বিদেশি নাগরিক আগমনের বছরভিত্তিক একটি তালিকা পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, ২০১৭ সালে দেশে আসে পাঁচ লাখ ৬৬৫ জন বিদেশি নাগরিক। এর পরের দুই বছরে আসে যথাক্রমে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ৭৩০ ও ছয় লাখ ২১ হাজার ১৩১ জন। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে এই সংখ্যা নেমে দাঁড়ায় এক লাখ ৮১ হাজার ৫১৮ জনে। পরের বছর আরো কমে এক লাখ ৩৫ হাজার ১৮৬ জনে দাঁড়ায়। ২০২২ ও ২০২৩ সালে দেশে আসা বিদেশি নাগরিকের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে পাঁচ লাখ ২৯ হাজার ২৬৮ ও ছয় লাখ ৫৫ হাজার ৪৫১।
যদিও পর্যটকদের এই তথ্য মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, বিদেশ থেকে আসলেই পর্যটক হয় না। এদের মধ্যে শতকরা ৯৯ ভাগের বেশি বিভিন্ন প্রকল্পে নিযুক্ত। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আসে, এই সংখ্যাটা সুস্পষ্ট না হলেও এটি যে অতি নগণ্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন হোটেল মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার। তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর দেশে বিদেশিদের আগমন বাড়তে শুরু করে। মূলত রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বিভিন্ন এনজিওকর্মী তখন দেশে আসেন। পাশাপাশি মাতারবাড়ী বন্দরের কাজের পরও দেশে অনেক বিদেশি প্রকৌশলী এসেছেন। এঁদের অনেকেই কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে থাকেন। তাঁরা পর্যটক না।’
তিনি আরো বলেন, ‘পর্যটকদের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিতে না পারায় দেশে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে গেছে। এর মধ্যে নিরাপত্তাও একটি। পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের পর্যাপ্ত সুবিধা না দেওয়ায় পর্যটক সংকট রয়েছে। শীতপ্রধান দেশের বিদেশি পর্যটকরা মূলত সূর্যস্নান করতে চায়। আমরা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সোনাদিয়ার একাংশকে ডে বিচ ঘোষণার দাবি জানিয়েছি।’
১৮ থেকে ২০ ডিসেম্বর কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে বিদেশি হাতে গোনা কয়েকজন পর্যটক দেখা গেছে। এর মধ্যে কলাতলীসংলগ্ন বিচে এক বিদেশি নারী ও পুরুষকে দেখা যায়। এ ছাড়া পাথুরে টেক বিচে একটি পরিবারের চারজন সদস্যকে দেখা গেছে। তা ছাড়া বিছিন্নভাবে কয়েকজন বিদেশিকে দেখা গেছে।
পর্যটকরা বলছেন, বাংলাদেশের তুলনায় বিদেশে ভ্রমণ সাশ্রয়ী। জানা যায়, ফ্রেশ পাসপোর্টে কোনো ডকুমেন্ট ছাড়াই মাত্র ৭৫ হাজার টাকায় ছয় রাত সাত দিনের শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ ট্যুর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এই ট্যুরের আওতায় রিটার্নের এয়ার টিকিট, চারতারা হোটেল, সঙ্গে ব্রেকফাস্ট, পিক অ্যান্ড ড্রপ, সিটি ট্যুর, অল ট্যাক্স ও ট্যুর গাইড পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া ৪৫ হাজার ৫০০ টাকায় তিন রাত চার দিনের জন্য নেপাল ট্যুরের বিভিন্ন প্যাকেজ পাওয়া যায় বিভিন্ন ট্যুর এজেন্সিতে। সেখানে দেশের বিভিন্ন চারতারা মানের হোটেলে থাকা ও বিমানভাড়াসহ এই ব্যয় কাছাকাছি।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি চাকরিজীবী আলী ইব্রাহিম বলেন, ‘বাংলাদেশের যেকোনো স্পটে ভ্রমণের তুলনায় বিশ্বের অন্যান্য দেশে কম খরচে ভ্রমণ করা যায়। থাইল্যান্ডে চারতারা হোটেলে সি ভিউ রুম পাওয়া যায় তিন থেকে চার হাজার টাকায়, যা বাংলাদেশে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ওখানে যাতায়াতব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আপনি সেখানে নিরাপদ।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের মধ্যে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তারা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে মোট ১২৯ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ১১১ কোটি টাকা। এই হিসাবে এক মাসে ব্যয় বেড়েছে ১৮ কোটি টাকা বা প্রায় ১৬.২ শতাংশ। বিদেশিদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সবচেয়ে বড় অংশ নগদ অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে, যা অক্টোবরে মোট খরচের ৪৭ কোটি টাকা।
অন্যদিকে দেশের বাইরে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহারে থাইল্যান্ড এখন দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। আগস্টের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পরিবর্তনের পর ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে এই প্রবণতা লক্ষ করা গেছে। সেপ্টেম্বর মাসে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশিরা ক্রেডিট কার্ডে ৪২ কোটি টাকা খরচ করলেও অক্টোবরে তা একলাফে বেড়ে ৫৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে, যা ১৬ কোটি টাকা বৃদ্ধি নির্দেশ করে। এর ফলে থাইল্যান্ড সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় অবস্থানধারী ভারতকে পেছনে ফেলেছে।
অক্টোবরে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে মোট ৪৯৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৪২১ কোটি টাকা। এই খরচের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যয় হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে অক্টোবরে ব্যয় হয়েছে ৮৪ কোটি টাকা, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৭৭ কোটি টাকা। এক মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডে ব্যয় বেড়েছে সাত কোটি টাকা বা প্রায় ৮.৫ শতাংশ।
কক্সবাজার নাগরিক ফোরাম ও বাংলাদেশ পরিবেশ অ্যান্ড বায়োডাইভারসিটি কনভারসন ফাউন্ডেশনের সভাপতি এ এন এম হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশকে বাঁচিয়ে পর্যটনকে এগিয়ে নিতে হবে। দেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় কক্সবাজারে বিদেশি পর্যটক কমছে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য পৃথক পর্যটন এলাকা নির্ধারণ করা জরুরি।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় চট্টগ্রাম থেকে সপরিবারে কক্সবাজারে আসা অ্যাডভোকেট রাহিদ মির্জার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে পর্যটন খাত। কিন্তু আমি দুই দিনেও কোনো বিদেশি পর্যটক দেখিনি। শুধু দেশি পর্যটক দিয়ে পর্যটন খাতের উন্নয়ন সম্ভব নয়।’ তিনি আরো বলেন, বিদেশি পর্যটকদের জন্য বাড়তি সুবিধা দিতে হবে। তাদের জন্য নির্ধারিত এলাকা থাকা উচিত। পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখতে হবে।
নবীন নিউজ/পি
টাকা খরচ করে এমপি হতে চায় ব্যবসার জন্য: হাসনাত আব্দুল্লাহ
নাম বদলের খেলায় বিপদে দেশ
বিসিবি নির্বাচন নিয়ে মুখ খুললেন ইশরাক
পাচার হওয়া সম্পদ ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান ড. ইউনূসের
মাহিন সরকারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার
প্রায় ৪ কোটি টাকার হেরোইন ফেলে চোরাকারবারিদের নদীতে ঝাঁপ
‘নিখোঁজ’ মামুনুর রশিদকে ফেরত চান জামায়াত আমির
এবার মির্জা ফখরুলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সেই ছবি প্রকাশ করল ‘এই সময়’
ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত
বাংলাদেশ দূতাবাস রাবাতে ই-পাসপোর্ট সেবার উদ্বোধন
খাওয়া ও বিশ্রামে ব্যস্ত, ৩ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার
কিশোরগঞ্জে বিএনপির সম্মেলন ঘিরে সাজ সাজ রব, ফজলুর রহমানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত কী?
২০২৫ সালেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০২৬ এর বইমেলা!
সৌদি-পাকিস্তানের চুক্তি নিয়ে আসিফ নজরুলের প্রতিক্রিয়া
কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারির দাবিতে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
জাকসু ও ডাকসু পরাজিত শক্তির ভোটে একটি দল বিজয়ী হয়েছে: রিজভী
বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট দাবি করা সেই এনায়েত কারাগারে
মুক্তিযুদ্ধ না মানলে বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হবে : জামায়াত নেতা আযাদ
সরকার কি সেনাবাহিনীকে ভয় পাচ্ছে, নাকি অন্য কোনো ষড়যন্ত্র আছে?
জয়-পুতুল-রাদওয়ানকে নিয়ে ‘রাহুল-প্রিয়াঙ্কা মডেলে’ আ.লীগের নেতৃত্ব সাজাচ্ছেন হাসিনা
নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে দেশজুড়ে পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষণ শুরু হচ্ছে আজ
উচ্চকক্ষ নিয়ে সরকারের অনুরোধ রাখেনি বিএনপি
পুলিশের নজরে বিশেষ ’সাড়ে ৩ ঘণ্টা’, কি ঘটতে চলেছে ঢাকায় ?
‘নির্বাচন নিয়ে জামায়াতের ষড়যন্ত্র একার না, শেখ হাসিনারও’
গোপালগঞ্জ দ্বন্দ্বের কারণে ফের আইজিপি করা হয় আমাকে : মামুন
মামুনের খুলি ফ্রিজে, মাথায় লেখা ‘হাড় নেই, চাপ দিবেন না’
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা : তারেক রহমান-বাবরের খালাসের রায় আপিলে বহাল
ভোটারপিছু ১০ টাকা খরচ করতে পারবেন প্রার্থী, ইসির প্রস্তাব
নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগ
নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর ভিন্নমত: নির্বিঘ্ন নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা